আজ ২০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

২০২৪ সালে না ফেরার দেশে যারা

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক

২০২৪ সালে সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই চলে যান না ফেরার দেশে। যাদের আমরা হারিয়েছি তাদের স্মরণ করতেই এ আয়োজন। লিখেছেন- তারেক আনন্দ

মাসুদ আলী খান

কিংবদন্তি অভিনেতা মাসুদ আলী খান মারা যান ৩১ অক্টোবর। দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। মাসুদ আলী খানের অভিনয়ের শুরুটা হয় মঞ্চ নাটকের মধ্যামে। ১৯৫৬ সালে দেশের প্রথম নাটকের দল ‘ড্রামা সার্কেল’-এর সঙ্গে যুক্ত হন মাসুদ আলী খান। ১৯৬৪ সালে নূরুল মোমেনের নাটক ‘ভাই ভাই সবাই’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ছোট পর্দায় তার অভিষেক হয়। পাঁচশর বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০২৩ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য মাসুদ আলী খান পেয়েছেন একুশে পদক।

সুজেয় শ্যাম

কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম মারা যান ১৭ অক্টোবর। ১৯৪৬ সালের ১৪ মার্চ সিলেটে সুজেয় শ্যামের জন্ম। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের এই শব্দসৈনিকের সুর করা গানগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আহা ধন্য আমার জন্মভূমি’, ‘আয় রে চাষি মজুর কুলি’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’ এবং ‘শোন রে তোরা শোন’। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে একুশে পদক এবং এর আগে ২০১৫ সালে পান শিল্পকলা পদক।

আবু জাফর

গীতিকার, সুরকার ও শিক্ষক আবু জাফর মারা যান ৫ ডিসেম্বর। আবু জাফর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। একাধিক কালজয়ী গানের স্রষ্টা তিনি। এর মধ্যে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিধিল গায়ে’, ‘আমি হেলেন কিংবা মমতাজকে দেখিনি’, ‘তুমি রাত আমি রাতজাগা পাখি’সহ আরও অনেক গান উপহার দিয়েছেন এই গীতিকবি।

সাদি মহম্মদ

রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ চলে যান ১৩ মার্চ। অজানা এক অভিমানে আত্মহত্যা করেন এই সংগীতশিল্পী। জন্ম ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর। ১৯৭৬ সালে প্রথমে শান্তিনিকেতন এরপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রসংগীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে ‘সার্থক জনম আমার’ নামে তার দুটি অ্যালবাম প্রকাশ হয়। তার প্রকাশিত অ্যালবামের সংখ্যা ষাটের অধিক। সাদি মহম্মদকে ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে।

পাপিয়া সারোয়ার

১২ ডিসেম্বর মারা যান একুশে পদকজয়ী রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। রবীন্দ্রসংগীতের পাশাপাশি তিনি আধুনিক গানেও শ্রোতাদের প্রিয়শিল্পী ছিলেন। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন’ গানের জন্য শ্রোতাহৃদয়ে বেঁচে থাকবেন এই শিল্পী। পাপিয়া সারোয়ার দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন।

শাফিন আহমেদ

ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ ২৫ জুলাই মারা যান। ব্যান্ডসংগীতের কিংবদন্তি এই গায়ক উপহার দেন ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’ প্রভৃতি গান।

হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল

এ বছর ৩০ জুলাই রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান সংগীতশিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। ২০১১ সালে তার লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। এর পর ফুসফুস এবং হাড়েও সেটি ক্রমেই সংক্রমিত হয়। ৩০ জুলাই রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে লইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখান থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই সংগীতশিল্পী।

মনি কিশোর

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোর মারা যান ২০ অক্টোবর। মনি কিশোর পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। রেডিও, টিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হলেও গান গেয়েছেন অল্প। তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ প্রভৃতি।

খালিদ

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী খালিদ ১৮ মার্চ মারা যান। ‘চাইম’ ব্যান্ডের এই ভোকালিস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জে জন্ম নেন এই শিল্পী। ১৯৮১ সালে গানের জগতে যাত্রা করেন। ১৯৮৩ সালে ‘চাইম’ ব্যান্ডে যোগ দেন। ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’সহ আরও বেশ কিছু জনপ্রিয় গান উপহার দেন এই সংগীত তারকা।

আহমেদ রুবেল

৭ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেতা আহমেদ রুবেল। ‘পেয়ারার সুবাস’-এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। গাড়ি থেকে নামার পর অসুস্থবোধ হওয়ায় তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রÑ তিন মাধ্যমেই সমান জনপ্রিয় ছিলেন এই গুণী অভিনেতা। আহমেদ রুবেল ১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামে জন্ম নেন।

অলিউল হক রুমি

২২ এপ্রিল জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি চলে যান না ফেরার দেশে। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানেন এ অভিনেতা। ১৯৬৪ সালের ২৪ অক্টোবর বরগুনায় জন্মগ্রহণ করেন রুমি। অভিনয়ে তিন দশকের বেশি সময় পার করেছেন। দীর্ঘ সময়ে অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক ও সিনেমায়। ১৯৮৮ সালে অভিনয়ের শুরু থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনো ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে। বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় অভিনয় করে জনপ্রিয় হন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর